নতুন গাড়ি কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র গাড়িটি কেমন দেখতে অথবা কোন ব্র্যান্ড বা মডেলের, এর উপর ভিত্তি করে নেওয়া উচিত নয় | গাড়িটি কেমন দেখতে তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ তবে গাড়িটির ইঞ্জিন কেমন তা আরো বেশি গুরুত্বপুর্ণ কারণ ইঞ্জিনের পারফর্মেন্সই গাড়ি নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতাকে বেশি প্রভাবিত করবে |
আমরা ইঞ্জিন পারফর্মেন্স বলতে বুঝাচ্ছি, ইঞ্জিনের আউটপুট এবং জ্বালানী খরচের হার (FUEL CONSUMPTION RATE) আর এই দুটি বিষয় নির্ভর করে ইঞ্জিন সাইজের উপর তাই নতুন গাড়ি কেনার সময় ইঞ্জিন সাইজ সম্পর্কে ধারনা থাকা উচিত |
ইঞ্জিনের সাইজ দ্বারা ইঞ্জিনের ক্ষমতা বোঝানো হয় এবং এটি কিউবিক সেন্টিমিটার (CC) বা লিটারে (L) প্রকাশ করা হয় ।
কেন ইঞ্জিনের আকার টি কিউবিক সেন্টিমিটার (CC) বা লিটার (L) দিয়ে প্রকাশ করা হয় ? একটি গাড়ির ইঞ্জিনে সাধারণত একাধিক সিলিন্ডার থাকে এবং প্রতিটি সিলিন্ডারে একটি পিস্টন থাকে যা সিলিন্ডারের ভেতর উপরে-নিচে উঠা-নামা করার মাধ্যমে ইঞ্জিনের শক্তি উৎপন্ন করে । প্রতিটি সিলিন্ডারের ভেতর বাতাস এবং জ্বালানির সংমিশ্রন একবার প্রবেশ করে এবং তা পুড়ে বের হয়; এই প্রক্রিয়ায় পিস্টন একবার নিচে নামে এবং উপরে উঠে, এভাবে ইঞ্জিনের শক্তি উৎপন্ন হয় ।
ইঞ্জিনের ভেতর যতবেশী বাতাস এবং জ্বালানির সংমিশ্রন প্রবেশ করে ততবেশি শক্তি উৎপন্ন হয় । সিলিন্ডারের বাতাস এবং জ্বালানির ধারন ক্ষমতার উপর ইঞ্জিনের সাইজ নির্ভর করে ।
গাড়ির ইঞ্জিনের সাইজ পরিমাপ করতে সিলিন্ডারের বাতাস এবং জ্বালানির ধারন ক্ষমতার সাথে সিলিন্ডারের সংখ্যা গুন্ করলে ইঞ্জিনের সাইজ পাওয়া যাবে ।
বড় সিলিন্ডার যুক্ত ইঞ্জিনে জ্বালানি খরচ বেশী হবে এবং ছোট সিলিন্ডার যুক্ত ইঞ্জিনে জ্বালানী খরচ কম হবে ।
এটি নির্ভর করে আপনার ড্রাইভিংয়ের উপর, আপনাকে যদি প্রায়ই শহরের বাইরে যেতে হয় তবে বড় ইঞ্জিনের একটি গাড়ী আপনার জন্য ভাল; কারণ, বড় ইঞ্জিন বেশি শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম । শহরের ভেতর ব্যবহার করার জন্য ছোট ইঞ্জিনের গাড়ি বেশি উপযুক্ত এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী ।
এই প্রশ্নটি দেশ অথবা ব্যাক্তি অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে | তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা (কার ইনফো বাংলাদেশ) ১৫০০ সিসি বা এর থেকে কম সাইজের ইঞ্জিন কে ছোট সাইজের ইঞ্জিন বলে আখ্যায়িত করবো | যেহেতু আমরা আগেই বলেছি যে গাড়ির ইঞ্জিন কে ছোট বা বড় সাইজে বিভক্ত করা সহজ কাজ হবে না কারণ এক এক জনের চাহিদা এক এক রকম এবং এক এক জন এক এক ভাবে গাড়ি ব্যাবহার করে থাকেন |
বাংলাদেশের আবহাওয়া এবং ট্রাফিক বিবেচনায় আপনাকে বেশির ভাগ সময়ে গাড়ির এয়ার কন্ডিশনার চালিয়ে রাখতে হয় এবং শহরের ট্রাফিক বেশি থাকার কারনে আপনাকে বার বার গাড়ি থামাতে হবে | আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলবো, এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য কমপক্ষে ১৫০০ সিসি ইঞ্জিন বিশিষ্ট একটি গাড়ি বেছে নেওয়া উচিত |
আপনি যদি বাজেট সচেতন ক্রেতা হয়ে থাকেন এবং গাড়ির জ্বালানী খরচের হার (FUEL CONSUMPTION RATE) নিয়ে চিন্তা করে থাকেন তবে আপনার ইঞ্জিনের সাইজ টি আরো গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত কারণ ইঞ্জিনের সাইজ আপনার গাড়ির জ্বালানী খরচের পরিমান এবং গাড়ির সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য খরচকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ছোট ইঞ্জিনের গাড়ি, বড় ইঞ্জিনের গাড়ি থেকে বেশি জ্বালানী সাশ্রয়ী । অন্যদিকে ইঞ্জিনের সাইজের উপর ভিত্তি করে আপনার বার্ষিক ফিটনেস ফি, অগ্রিম আয়কর ইত্যাদি এর পরিমান নির্ধারিত হবে, অর্থাৎ বড় ইঞ্জিনের গাড়ির ফিটনেস ফি, অগ্রিম আয়কর এর টাকার পরিমান ছোট ইঞ্জিনের গাড়ির থেকে বেশি |